বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার উম্মে সালমা খাতুন (৫০) হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার হওয়া তার ছোট ছেলে সাদ বিন আজিজুর (১৯) জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় বগুড়া জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি দাবি করেন, “র্যাবের কাছে আমি কোনো স্বীকারোক্তি দিইনি। মাকে হত্যার বিষয়ে কোনো কথাও বলিনি।”
কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় সাদের পাশে ছিলেন তার বাবা আজিজুর রহমান এবং বড় ভাই নাজমুস সাকিব। র্যাবের দাবি ছিল, সাদ হাতখরচের টাকার জন্য মা-ছেলের ঝগড়ার এক পর্যায়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটান এবং ঘটনাটি ডাকাতির ছদ্মবেশে ঢাকতে চেয়েছিলেন। তবে সাদের এই বক্তব্য র্যাবের দেওয়া তথ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং বিষয়টি নিয়ে আরও তদন্ত চলছে।
রাতে প্রথম আলোর সঙ্গে কথোপকথনে সাদ বিন আজিজুর জানান, “আমি কখনোই হত্যার কথা স্বীকার করিনি। র্যাব কেন গণমাধ্যমে এ ধরনের কথা বলেছে, তা তারাই ভালো জানে।”
এর আগে, বগুড়ার জ্যেষ্ঠ জেলা জজ মো. শাহজাহান কবিরের আদালতে শুনানি শেষে গতকাল বুধবার সাদের জামিন মঞ্জুর করা হয়।
সাদের বাবা আজিজুর রহমান এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, “স্ত্রী হত্যার ঘটনায় আমি ভেতরে যে রক্তক্ষরণ অনুভব করছি, তা কাউকে বোঝাতে পারব না। এই শোকের মধ্যেই আমার ছোট ছেলেকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে র্যাব, যা আমাদের জন্য আরও মর্মান্তিক। আমরা বিশ্বাস করি, তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছে।”
এ ঘটনায় পরিবারটি হতাশ ও বিচলিত, এবং তারা ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছেন।
১০ নভেম্বর দুপুরে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের একটি চারতলা ভবনের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটের ফ্রিজ থেকে উম্মে সালমা খাতুনের লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি দুপচাঁচিয়া ডিএস ফাজিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ আজিজুর রহমানের স্ত্রী এবং ওই ভবনের মালিক।
পরদিন র্যাব-১২-এর বগুড়া ক্যাম্পের তৎকালীন অধিনায়ক মেজর মো. এহতেশামুল হক খান এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, সাদ হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তবে পুলিশ পরবর্তী তদন্তে ভিন্ন তথ্য পায় এবং বাসার ভাড়াটিয়া মাবিয়া সুলতানা, সুমন রবিদাস এবং মোসলেম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে। তদন্তে তারা হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ার কথা জানায়【5†source】【6†source】।
এই ঘটনায় র্যাবের প্রাথমিক দাবি এবং পুলিশের পরবর্তী তদন্তে পাওয়া ভিন্ন তথ্য জনমনে প্রশ্ন তুলেছে। বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন এবং সঠিক ঘটনা উদ্ঘাটনে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
0 Comments