বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে আদালত থেকে কারাগারে নেওয়ার সময় তাঁর অনুসারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ ঘটে। ঘটনাটি ঘটেছে ২৬ নভেম্বর বিকেলে চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে। (ফাইল ছবি)

 

চট্টগ্রামে পুলিশের ওপর হামলা ও কাজে বাধা দেওয়ার মামলায় গ্রেপ্তার ১২ আসামির প্রত্যেককে ছয় দিনের রিমান্ডে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় পুলিশের আবেদনের পর অতিরিক্ত চিফ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।

রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া আসামিরা হলেন—জয় নাথ, রুমিত দাস, নয়ন দাস, গগন দাস, সুমিত দাস, আমান দাস, বিশাল দাস, সনু মেথর, সুমন দাস, রাজেশ দাস, দুর্লভ দাস এবং অজয় সূত্রধর চৌধুরী। এর আগে, গত সোমবার একই ঘটনার আরেক মামলায় আট আসামির সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন আদালত।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, পুলিশের ওপর হামলার দুটি মামলায় ১২ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কোতোয়ালি থানা-পুলিশ সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিল। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মফিজুর রহমান আরও বলেন, আসামিদের সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।

প্রসঙ্গত, ২৬ নভেম্বর আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে যখন রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর করা হয়। এ সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধাদান, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও চারটি মামলা দায়ের হয়। পাঁচ মামলায় মোট ৩৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে ৯ জন হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার রয়েছেন।

গত সোমবার পুলিশের ওপর হামলার মামলায় দুই আসামির পক্ষে ওকালতনামা জমা দিলে আইনজীবীদের বিক্ষোভের মুখে অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর সরকারি কৌঁসুলি নেজাম উদ্দিন পদত্যাগ করেন।

এ ঘটনায় পুলিশের সংগ্রহ করা ৫২ সেকেন্ডের ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন ওম দাশ, চন্দন ও রণব। অন্যরা লাঠি দিয়ে আঘাত করতে থাকেন। ঘটনায় ২৫-৩০ জনের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে, যাঁদের বেশিরভাগই পরিচ্ছন্নতাকর্মী।